কক্সবাজার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ (বৃহস্পতিবার) :
মাহবুব আলম মিনার
আরাকান আর্মির বিশ্বস্ত ইয়াবা কারবারি হয়ে উঠেছে রোহিঙ্গা যুবক মলয় জুবায়ের। ইয়াবা ব্যবসার অর্থে তিনি গড়ে তুলেছেন আলিশান বাড়ি, গাড়ি, এমনকি সংগ্রহ করেছেন ভুয়া বাংলাদেশি এনআইডিও। গোপন সূত্রে জানা গেছে, নিয়মিত ঢাকা-চট্টগ্রাম যাতায়াতের আড়ালে চলছে তার মাদক বাণিজ্য।
ইয়াবা পাচারে জুবায়ের
৯ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা রশিদুল্লার ছেলে জুবায়ের দীর্ঘদিন ধরেই ইয়াবা পাচারে জড়িত। আরাকান আর্মির কাছ থেকে বড় চালান এনে সীমান্ত পথে বাংলাদেশে পাচার করছে সে। সম্প্রতি নাইক্ষ্যংছড়ির সোনাইছড়ি সীমান্ত দিয়ে নতুন চালান আসার তথ্যও মিলেছে।
ঢাকা-চট্টগ্রাম যাতায়াত
জুবায়ের প্রায়ই রেল ও বিমানে ভ্রমণ করে ঢাকায় যাতায়াত করছে। কখনও স্ত্রী-সন্তানকে নিয়েও যাতায়াত করতে দেখা যায় তাকে। কক্সবাজার রেলস্টেশনে তার একাধিক ছবি স্থানীয় সংবাদদাতাদের হাতে এসেছে।
ইয়াবার টাকায় আলিশান জীবন
ইয়াবা ব্যবসার টাকায় জুবায়ের গড়ে তুলেছে পাকা দালানবাড়ি ও ব্যক্তিগত গাড়ি। ভুয়া এনআইডি বানিয়ে কক্সবাজারের পালংখালি ইউনিয়নে জমি কিনেছে। ক্যাম্প ও গ্রামে ব্যবসার আড়ালে চলে তার মাদক কারবারের পরিকল্পনা।
আরাকান আর্মির সংযোগ
জুবায়েরের মাধ্যমে পাচার হওয়া অর্থে আরাকান আর্মি বিদেশি অস্ত্র কিনে মিয়ানমারে নড়াই চালাচ্ছে। সংগঠনটি রোহিঙ্গাদের ওপর নতুন করে নিপীড়ন চালিয়ে হাজারো মানুষ হত্যা করেছে। শুধু ২০২৪ সালেই প্রাণ বাঁচাতে ১ লাখ ৬০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ
সীমান্তে পাচারকারীদের কারণে প্রতিনিয়ত মাদক ও অপহরণের শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। স্থানীয়দের অভিযোগ, চিহ্নিত কারবারিদের আইনের আওতায় না আনলে আরাকান আর্মি আর্থিকভাবে আরও শক্তিশালী হয়ে উঠবে। এক রোহিঙ্গা যুবক জানান, জুবায়েরের নেটওয়ার্কে স্থানীয় ইয়াবা ব্যবসায়ী ও অপহরণকারীরাও যুক্ত রয়েছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অবস্থান
বিজিবি সীমান্তে কড়াকড়ি চালাচ্ছে এবং নিয়মিত কোটি টাকার ইয়াবা উদ্ধার করছে। তবে মূল কারবারিরা এখনো ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। এপিবিএন-৮ এর অধিনায়ক পুলিশ সুপার রিয়াজ উদ্দিন আহম্মেদ পিপিএম বলেন,
> “সঠিক তথ্য পাওয়া মাত্রই ইয়াবা কারবারি ও আরাকান আর্মির এজেন্টদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”